দিল্লীতে, অফিসে বা রাস্তায়, পরিচিত কারো সাথে দেখা হলে সৌজন্য দেখান হয় এই বলে , “কেয়া হাল হ্যায়! সব ঠিক?’ বলেই তারা আর প্রত্যুত্তরের অপেক্ষা না করে এগিয়ে যায় একটু হেসে, কিম্বা ছুয়ে যায় আঙ্গুলে আঙ্গুল। দুরত্বটা বেশি হলে বড়জোর ঘাড় বেকিয়ে হাতটা তোলে ছোট্ট করে। এখানে যে সবাই ছুটছে, কারো সময় নেই! বড্ড তাড়া।
জাপানের লোকেরা শুনেছি বেজায় ভদ্র। অর্ধ নত হয়ে নিঃশব্দে “আরিগাতো” করে হাসিমুখে। আমেরিকায় ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কে কর্মরত বন্ধু বলেছিলেন অফিসের সহকর্মী করিডোরে চিনতে পারে না, কিন্তু নিজের টেবিলে গিয়ে মেল বক্সে জানায় “হাই, গুড মর্র্নিং”
আমরা, বাঙালীরা, পরের ব্যাপারে খুব সেনসিটিভ। পরিচিতদের কারোর “কেমন আছেন” এর উত্তরে যদি বলি, “দারুণ”, কাছে এসে বলে, “দারুণ মানে? বি-পি টি-পি, আর সুগার সব ঠিক তো……”, থামিয়ে দিয়ে বলি , “আরে না না ওসব ঠিকআছে……” কাছাকাছি মুখ নিয়ে এসে বলে, ” চেক আপ সব করাবেন, …।।বয়স টা তো…”
বলে দিলেই হয়, ” আপনার কী মশাই, নিজের বয়সও তো ওই……।”। সেসব কিছুই না বলে হাঁটা দিই।
কিছু মানুষের মনে হয় সবসময় তারা অসুখে ভুগছে বা কোন অজানা অসুখ অপেক্ষা করে আছে তার জন্য, এই বুঝি হামাগুড়ি দিয়ে ধরল এবার। সেই জাতের লোককে যদি জিজ্ঞেস করি, ” কেমন আছেন?” , মুখের সব আলো নিভিয়ে তিনি জবাব দেন, ” আর বলবেন না, আমার আজকাল বুকটা থেকে থেকে ধড়াস ধড়াস করে, মাথাটাও কেমন যেন—-“।
আমার এক আত্মীয়া আছেন, যাকে ফোন করে খোঁজখবর নিলেই অপর প্রান্ত থেকে জবাব আসে, “আর বলিস না, সেই পুরনো মাইগ্রেনটা বড্ড জালাচ্ছে,সব সময় মাথা ঝনঝন……।।” তারপর একপ্রস্থ রোগের ফিরিস্তি।
এবার থেকে ভাবছি আগের থেকে একটা রোগের লিস্ট বানিয়ে রাখব আগে ভাগে, যাতে যথাসময়ে যথাযথ প্রয়োগ করতে পারি।